স্বদেশ ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট তদন্ত বুধবার থেকে প্রকাশ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এর ফলে ট্রাম্প আরও চাপের মুখে পড়লেও এখনো তার দল ও সমর্থকরা আনুগত্য দেখিয়ে চলেছে।
কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করা সহজ কাজ নয়। সংসদের উভয় কক্ষে যথেষ্ট সমর্থন না পেলে এমন পদক্ষেপ ব্যর্থ হতে বাধ্য। অর্থাৎ প্রেসিডেন্টের নিজস্ব দলের যথেষ্ট সংখ্যক সদস্য দলের স্বার্থকে পেছনে ফেলে দেশের স্বার্থে এমন বিরল অবস্থান নিলে তবেই বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাসীন ব্যক্তিকে পদচ্যুত করা সম্ভব। জনমতের চাপ তাদের সেই অবস্থান নিতে বাধ্য করতে পারে। ২০১৯ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে দেশের মানুষ এমন ধারণা পোষণ করছেন কিনা, চলতি সপ্তাহে তার আভাস পাওয়া যাবে।
মার্কিন সংসদের নিম্ন কক্ষে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ইম্পিচমেন্ট তদন্তের শুনানি চলছে। রুদ্ধদ্বার কক্ষে অনেক ব্যক্তির কাছ থেকে সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়েছে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটি। বুধবার থেকে প্রকাশ্যে সেই পর্ব শুরু হবে। টেলিভিশনের পর্দায় সেই ঘটনার সরাসরি সম্প্রচার হবে। ১৯৪৩ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের বিরুদ্ধে সেনেটে ওয়াটারগেট শুনানির পর অ্যামেরিকার মানুষ আবার এমন ঘটনার সাক্ষী হবেন। সে যুগে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এই কর্মযজ্ঞ দেখেছিলেন। ১৯৯৮ সালে বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে তদন্ত নিয়েও ব্যাপক আগ্রহ দেখা গিয়েছিল। বর্তমানে টেলিভিশনের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও উত্তপ্ত হয়ে উঠবে বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। অ্যামেরিকার ইতিহাসে এই নিয়ে চতুর্থবার ইমপিচমেন্ট তদন্ত শুরু করছে।
বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দল ইতোমধ্যেই প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে বলেই প্রকাশ্যে শুনানির পথে অগ্রসর হয়েছে, এমনটাই ধরে নেওয়া হচ্ছে। গোপন অধিবেশনের বেশ কিছু প্রতিলিপিও প্রকাশিত হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সম্পর্কে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করতে ট্রাম্প যেভাবে এক বিদেশি রাষ্ট্রের উপর যে পরিমাণ চাপ সৃষ্টি করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে, তা ইম্পিচমেন্টের কারণ হতে পারে বলে বিরোধীরা মনে করছে। ডেমোক্র্যাটিক দলের অন্যতম প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন ও তার পুত্র সম্পর্কে ‘আপত্তিকর’ তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করতে ট্রাম্প নাকি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। অন্যথায় ইউক্রেনের জন্য মার্কিন সামরিক সাহায্য বন্ধ রাখার হুমকি দিয়েছিলেন।
ইমপিচমেন্ট তদন্তে অগ্রগতি ঘটলে এবং প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আরও স্পষ্ট তথ্যপ্রমাণ পেলে পরবর্তী পর্যায় শুরু হতে পারে। সাধারণ মানুষ ডনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়লে রিপাব্লিকান দলের অনেক সংসদ সদস্যও প্রেসিডেন্টের প্রতি আনুগত্য ত্যাগ করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে যথেষ্ট সমর্থনের ভিত্তিতে মূল ইম্পিচেন্ট প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। তবে সে রকম পরিস্থিতি দেখা দিলে ট্রাম্প নিজেই পদত্যাগ করতে পারেন।
এখনো পর্যন্ত অবশ্য ট্রাম্প শিবির এমন চাপ উপেক্ষা করে যথেষ্ট ঐক্য দেখাচ্ছে। ট্রাম্প অনুগামীরাও প্রেসিডেন্টের প্রতি আনুগত্য দেখাচ্ছে। ইমপিচমেন্ট তদন্তকে তারা বিরোধীদের বড় ষড়যন্ত্র হিসেবে তুলে ধরছে। সূত্র : ডয়চে ভেলে।